Subscribe To Our Youtube Channel



Thursday, September 14, 2017

The Autopsy of Jane Doe: শ্বাসরুদ্ধকর একটি ক্লাসিক হরর মুভি


একটু চিন্তা করতে চেষ্টা করুন।

ধরুন আপনি একটি বদ্ধ জায়গার মধ্যে আটকা পরেছেন এবং সেই জায়গাটি হচ্ছে আন্ডারগ্রাউন্ডে অবস্থিত কোন একটি শক্ত প্রাচীরের মধ্যে। আপনার সাথে দ্বিতীয় কোন মানুষ যেখানে নেই। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আপনি অনুভব করতে লাগলেন যে আপনার সাথে সেখানে দ্বিতীয় কোন ব্যাক্তির উপস্থিতি না থাকলেও কিছু একটা আছে সেখানে আপনার সাথে। যার অস্তিত্ব আপনি অনুভব করতে পারছেন ঠিকই কিন্তু তাকে আপনি দেখতে পারছেন না, তার নিশ্বাস নেবার শব্দ আপনি শুনতে পারছেন কিন্তু তাকে স্পর্শ করার মতো ক্ষমতা আপনার নেই। ভয় পেয়ে ছুটে সেখান থেকে ছুটে বের হতে চাইছেন কিন্তু পরক্ষণেই আপনি আবিষ্কার করলেন যে বাহিরে প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি হবার কারণে এই বদ্ধ জায়গাটি থেকে বের হবার একমাত্র দরজাটিও গাছের গুড়ি ভেঙে পরে আটকে গিয়েছে। আপনি চিরতরে সেই বদ্ধ জায়গাটিতে আটকা পরেছেন এবং যেখানে আপনি একা নন। কিছু একটা আছে আপনার সাথে সেখানে, কেউ একজন আছে………এবং সে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে আপনার দিকে……এগিয়ে আসছে আপনার………

উপরের বিবরণ পরে ইতিমধ্যে অনেকেই হয়তো বুঝে ফেলেছেন যে মুভিটি নিয়ে আমি লিখতে চলেছি সেটি কিছুটা Survival এবংTrapped থিম নিয়ে নির্মিত। ভূতের গল্প তো কম বেশি সবাই আমরা শুনতে পছন্দ করি কিন্তু সর্বসাধারণের কাছে যদি একটি প্রশ্ন করা হয় যে কোন ধরণের গল্পের প্রতি আপনার আকর্ষণ বেশি তাহলে খুব কম করে হলেও বেশ কিছু মানুষজনই কিন্তু বলবে যে আমার লাশকাটা ঘর নিয়ে কাহিনী শুনতে ভালো লাগে। আমাদের দেশের দুই প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং হুমায়ূন আহমেদ স্যারও এই Contextএর উপর ভিত্তি করে বেশ কিছু ছোট গল্প লিখে গিয়েছেন। তবে একেবারে পুরো একটি ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড যে লাশকাটা ঘর কিংবা মর্গের উপর নির্মিত হতে পারে সেটি আমার আগে জানা ছিল না। মুভিটি দেখার পর রীতিমত কিছুক্ষণের জন্য হলেও পুরোপুরিভাবে Stuck হয়ে ছিলাম আমি। আর সেই কারণেই আজ অনেকদিন পর আবারো আমার লিখতে বসা।

মুভিটির নাম The Autopsy of Jane Doe.

মুভিটির কাহিনী শুরু হয় একটি Police Investigation দিয়ে যেখানে কিনা দেখা যায় ইংল্যান্ডের ছোট্ট একটি County তে বেশ রহস্যজনক ভাবে একই পরিবারের সব মানুষজনের হত্যাকাণ্ড ঘটে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ এর কোন ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে না পারলেও পরবর্তীতে Crime Scene এর আলামত দেখে তারা নিশ্চিত হয় যে এই পরিবারের কোন সদস্যই আত্মহত্যা করে নি। তার উপর এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই Forensic Department এর লোকজন বাড়ির Basement এ কোনভাবে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় ১৮ ১৯ বছর বয়সী এক যুবতী মেয়ের লাশ খুঁজে পায় যে কিনা এই পরিবারের সদস্য নয়। বাকি সবকিছু পর্যালোচনা করে তারা এও বুঝতে পারে ঘটনার সময় বাড়িটিতে বাহির থেকে কোনভাবে Forced Entryকরা হয় নি। মুভিটির Opening Scene টি আরো জোরালো হয় যখন লাশটিকে দেখতে পেয়ে এক মহিলা Sheriff এই উক্তিটি করেন,

“There are no signs of forced entry and the victims seemed to be trying to escape the house instead.”

পরবর্তীতে দেখা যায় যে Coroner Tommy Tilden এবং তার ছেলে Austin খুবই বিচক্ষণতার সাথে তাদের নিজেদের তৈরি মর্গে একটি আগুনে পুড়ে যাওয়া মৃতদেহের পোস্টমর্টেম করতে থাকে।Tommy এই পেশার সাথে প্রায় কয়েক যুগ ধরে নিযুক্ত থাকার কারণে সে খুব সূক্ষ্মভাবে লাশটির Cause of Death কিংবা COD ধরে ফেলতে সক্ষম হয় এবং ঠিক সেই মুহূর্তে Sheriff সেই বাড়িতে খুঁজে পাওয়া মেয়েটির লাশটি নিয়ে মর্গে হাজির হয়। Tommy এবং তার ছেলে Austin বংশপরম্পরায় এই পেশার সাথে নিযুক্ত থাকার কারণে তারা দুজনেই Sheriff এর বেশ বিশ্বস্ত ছিল। ছোট শহরে এরকম একটি অজ্ঞাত মেয়ের লাশ পাবার কারণে Sheriff বেশ তোপের মধ্যে পরে যায় এবং Tommy কে সে অনুরোধ করে কাল সকালের মধ্যে যেন তারা এই লাশটির Cause of Death বের করে দেয় আর তা না হলে সে বেশ বিপদে পরে যাবে। Tommy রাজি হয় এবং Sheriffবের হয়ে যাবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সে এবং তার ছেলে Austin লাশটির ময়নাতদন্ত কিংবা Autopsy করতে শুরু করে। সে রাতে বাহিরে প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টি হচ্ছিলো কিন্তু লাশকাটা ঘরটি তাদের বাড়ির আন্ডারগ্রাউন্ডে অবস্থিত হবার কারণে বাহিরের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াকে অনেকটা উপেক্ষা করেই তারা দুজনে মিলে লাশটির Autopsy করতে থাকে। এবং সেই সাথে সাথে শুরু হয় অদ্ভুত সব ঘটনা। এমন সব ঘটনা কিংবা আলামত তারা দেখতে শুরু করে যা কিনা এক নিমিষে একজন মানুষের সারা জীবনের বিশ্বাসকে নড়বড় করে দিতে পারে। আর সেই সাথে তারা বুঝতে পারে যে সাধারণ কোন লাশের গায়ে তারা হাত দেয় নি। তাহলে……কি এমন আছে সেই লাশের মধ্যে….দুজনেই রীতিমত হন্যে হয়ে সেই উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে থাকে। কারণ সেই উত্তরের সাথে জড়িয়ে আছে তাদের জীবন অথবা মৃত্যু। আর পুরো কাহিনীটির মোড় ঘুরে যায় তখনই।

মুভিটি পরিচালনা করেছেন নরওয়ের পরিচালক André Øvredal. এটি এই পরিচালকের দ্বিতীয় ফিচার ফিল্ম। খুব সল্প পরিসরে বানানো এই মুভিটিতে Actual Horror Suspense এর ফীল তিনি যেভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন তা বেশ প্রশংসাযোগ্য। মুভিটি দেখে আপনি ভয়ের পাশাপাশি কিছুটা Thriller এরও স্বাদ পাবেন কেননা মুভিটির চিত্রনাট্য কিছুটা ফাস্ট আর অনেকটা Revealing Theme এর বেসিসে এগিয়েছে। মুভিটির সবচেয়ে বড় Positive দিক হচ্ছে মুভিটি শুরু হবার প্রায় সাথে সাথেই এর কাহিনী বেশ জমিয়ে ফেলা হয়। তাই আশা করি সল্প পরিসরের মুভি বলে দেখতে গিয়ে অন্তত বিরক্ত হবেন না। মুভিটির গল্প লিখেছেন যৌথভাবে Ian Goldberg এবংRichard Naing.

মুভিটিতে অভিনয় করেছেন The Girl Next Door এবং Into the Wild ক্ষ্যাত তারকা Emile Hirsch. ছবিটির Tommy Tildenএর চরিত্রে অভিনয় করেছেন Brian Cox. পরিচালক André Øvredal এর মতে পুরো মুভিটিতে সবচাইতে চ্যালেঞ্জিং Characterছিল Jane Doe চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেত্রী Olwen Kellyএর। পর্যাপ্ত পরিমাণ মেডিটেশন এর অভিজ্ঞতা থাকায় Olwen Kellyতার শরীরের Movement এবং শ্বাস প্রশ্বাস পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন চরিত্রটিতে অভিনয় করতে গিয়ে। মুভিটির একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন Game of Thrones এরRoose Bolton ক্ষ্যাত তারকা Michael McElhatton. চরিত্রটি কোনটি সেটি বলে আর Spoiler করলাম না।

এখন আসা যাক Jane Doe এর প্রসঙ্গে। আমেরিকা, কানাডা এবং ইংল্যান্ডের বেশ কিছু অঞ্চলে প্রাথমিকভাবে অজ্ঞাত পরিচয়ের কোন ব্যাক্তিকে Doe হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পুরুষদের বেলায় সেটি হয়John Doe, মহিলাদের বেলায় Jane Doe এবং বাচ্চাদের বেলায় একে Janie Doe হিসেবে ধরা হয়। এর সবচাইতে বেশি চর্চা হয় বিভিন্ন মর্গ এবং হাসপাতালগুলোতে অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশের বেলায়। মুভিটিতে বেশ সফলতার সাথে এই Concept টিকে কাজে লাগানো হয়েছে। মুভিটির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের দায়িত্বে ছিলেন  Danny Bensi এবং Saunder Jurriaans. মুভিটির মিউজিকও আপানাকে পদে পদে শিহরিত করতে বেশ সাহায্য করবে।

এখন আসি আসল কথায়। মুভিটি R-Rated মুভি। বুঝতেই পারছেন কাটা ছেড়ার দৃশ্য যথেষ্ট পরিমাণে আছে এই মুভিতে। এসব যারা দেখতে পারেন না, কিংবা দেখতে চান না তাদের জন্য এই মুভিটি না দেখাই ভালো। আগেও বলেছি মুভিটি সল্প পরিসরে সল্প কিছু চরিত্র নিয়ে বানানো একটি মুভি। আবদ্ধ পরিসর হবার কারণে মুভিটি দেখতে গিয়ে অনেকে কিছুটা চাপও অনুভব করতে পারেন। তার পাশাপাশি ভয় তো আছেই।

মুভিটি নির্মিত হয়েছে IM Global এর ব্যানারে। Distribution এর দায়িত্বে ছিল IFC Midnight. মুভিটি মুক্তি পায় গত ৯ সেপ্টেম্বার, ২০১৬ তে।

তো আরকি। শীতের শেষ তো প্রায় চলে এসেছে। এই শীতের রাতের হিম হিম আবহাওয়ায় যদি কেউ মুভিটি দেখতে চান তাহলে আর দেরি না করে বসে পরুন।

⇒মুভিটির ট্রেইলার দেখুন এখান থেকে।

Watch Trailer

ফুল মুভি ডাউনলোড  করুন এখান থেকে

Download Movie

1 comment: